উচ্চফলনশীল জাতের ধানের চাষ বাড়াতে পারলে চাল রপ্তানিও করা যাবে-কৃষিমন্ত্রী

কৃষি মন্ত্রণালয়- উচ্চফলনশীল জাতের ধানের চাষ বাড়াতে পারলে চাল রপ্তানিও করা যাবে-কৃষিমন্ত্রী//উৎপাদন খরচ হিসাব করেই ধানের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে কৃষকেরা ন্যায্যমূল্য পান-কৃষিমন্ত্রী

শ্রীমঙ্গল, ২২ এপ্রিল, ২৪ নতুন উচ্চফলনশীল জাতের ধানের চাষ সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে চাল রপ্তানি করাও সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুস শহীদ। তিনি বলেন, আমাদের প্রধান খাদ্য ভাত।

বর্তমানে আমাদের জনসংখ্যা ১৭ কোটি। ক্রমবর্ধমান এই বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য চাহিদা মিটাতে হলে চালের উৎপাদন আমাদেরকে অবশ্যই আরো বৃদ্ধি করতে হবে। সেজন্য, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং বিনা উদ্ভাবিত নতুন জাতের উচ্চফলনশীল ধানগুলো চাষ সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাহলে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে চাল রপ্তানি করাও সম্ভব হবে।

আজ সোমবার দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাইল হাওরে রুস্তমপুর গ্রামে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট আয়োজিত বোরো ধান কর্তন উৎসব অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, আমাদের সারা বছরের মোট চাল উৎপাদনের অর্ধেকের বেশি যোগান দেয় বোরো ধান। সেজন্য এ বছরও বোরোর আবাদ ও ফলন বাড়াতে আমরা ২১৫ কোটি টাকারও বেশি প্রণোদনা কৃষকদেরকে প্রদান করেছি। এর ফলে এ বছর সারাদেশে ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।

এবার ২ কোটি ২২ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। কৃষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ব্রি ধান৮৯, ব্রি ধান৯২, বঙ্গবন্ধু ধান১০০, ব্রি ধান১০২, বিনাধান ২৫ প্রভৃতি নতুন জাতগুলোর ফলন আগের পুরনো জাত ব্রি ধান২৮ ও ২৯ এর তুলনায় অনেক বেশি। এসব জাতের নতুন ধান চাষ করে কৃষকরা অভূতপূর্ব ফলন পেয়েছেন। এলাকাভেদে জাতগুলোর বিঘাপ্রতি গড় ফলন হয়েছে ২৫-৩০ মণ। এগুলোর চাষ বাড়াতে হবে। এর আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বোরো ধানের উৎপাদন খরচ হিসাব করেই ধানের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে কৃষকেরা ন্যায্যমূল্য পান। গতবছরের চেয়ে এবছর ধানের মূল্য কেজিপ্রতি দুই টাকা বাড়ান হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, ৭০% ভর্তুকিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষকদের কৃষিযন্ত্র দিয়ে যাচ্ছেন। এটি বিশ্বের বিরল উদাহরণ।

এই মুহূর্তে হাওরে প্রায় ৯ হাজার কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটা চলছে। এর ফলে দ্রুততার সঙ্গে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে ও হার্ভেস্টের সময় ধানের অপচয়ও কম হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক উর্মি বিনতে সালাম এর সভাপতিত্বে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহ মো: হেলাল উদ্দীন, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী, সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো: মতিউজ্জামান, উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ,পুলিশ সুপার মনজুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান শেষে কৃষকদের মধ্যে ভর্তুকিমূল্যে কম্বাইন হারভেস্টার বিতরণ করেন মন্ত্রী।

এছাড়া, ধামাইল, ঝুমুর নৃত্যসহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

কামরুল ইসলাম ভূইয়া